স্কুল-কলেজে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরা নিয়ে কর্ণাটকের বিতর্কের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, কোনও মহিলাই নিজের ইচ্ছেয় হিজাব পরেন না। মুসলিম মেয়েদের উপর জোর করে হিজাবের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যোগী বলেন, “কোনও মহিলা নিজেদের ইচ্ছেয় হিজাব পরেন না। তিন তালাকের মতো কুপ্রথাও কি মহিলারা কখনও গ্রহণ করেছিলেন? ওই সমস্ত মেয়ে এবং বোনদের জিজ্ঞেস করে দেখুন।”
তিনি আরও বলেন, এটি একটি খারাপ প্রথা, যা কিছু লোক জোর করে নারীর স্বাধীনতা খর্ব করতে চায়। কেন্দ্রীয় সরকার তিন তালাক প্রথা নিষিদ্ধ করে মুসলিম মেয়েদের রেহাই দিয়েছেন বলেও দাবি করেন যোগী। তাঁর কথায়, “আমি ওঁদের চোখের জল দেখেছি। নিজেদের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে চোখের জল আটকে রাখতে পারছিলেন না তাঁরা। জৌনপুরের এক মহিলা প্রধানমন্ত্র নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান।”
অন্যদিকে, এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, হিজাব নিয়ে যদি এত বিতর্ক, তাহলে যোগী আদিত্যনাথের পোশাক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে না কেন? যদিও বিরোধীরা বলছেন, আসল ইস্যু থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতে নির্বাচনের সময় এই ইস্যু নিয়ে এসেছে বিজেপি। এবিপি নিউজ চ্যানেলে অ্যাঙ্কর পঙ্কজ ঝা-এর সঙ্গে কথা বলার সময়, আসাদউদ্দিন ওয়াইসি জানান যে, কেউ যদি খ্রিস্টান ক্রস পরে আসে তবে কোন আপত্তি নেই, কেউ বিন্দি বা সিঁদুর পরলে, সেক্ষেত্রেও আপত্তি নেই কিন্তু হিজাবে আপত্তি কেন? আবার
অ্যাঙ্কর পঙ্কজ তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে “মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন যে গাজওয়া-ই-হিন্দ থেকে দেশ চলবে না, সংবিধান থেকে চলবে, এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন।এই প্রশ্নের উত্তরে ওয়াইসি বলেন যে “তাকে জিজ্ঞাসা করুন গাজওয়া-ই-হিন্দ মানে কী? ? মুখ্যমন্ত্রী যোগী যে পোশাক পরেন তা নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলা হয় না তা জানতে চাওয়া হয়। হিজাবের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে যোগীর গেরুয়া বসনের কথা উঠে এসেছে অনেকের মুখেই। গণতান্ত্রিক, ধর্ম নিরপেক্ষ দেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যোগী যদি বিশেষ ধর্মের প্রতি অনুরাগে গেরুয়া বসন পরতে পারেন, তাহলে মুসলিম মেয়েরা হিজাব পরে স্কুলে যেতে পারবেন না কেন, প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
ইন্ডিয়া টুডে নিউজ চ্যানেলের উপস্থাপক অঞ্জনা ওমকাশ্যপ উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে প্রশ্ন করেছিলেন যে দেশের প্রত্যেকের যখন তাদের পছন্দের পোশাক পরার স্বাধীনতা রয়েছে, তখন কেন তাদের হিজাব পরা থেকে বিরত করা হচ্ছে? এই বিষয়ে, সিএম যোগী বলেছিলেন যে “কোন মেয়ে স্বেচ্ছায় হিজাব পরে না”।
তথ্যসূত্র: পুবের কলম
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।